নিজস্ব প্রতিবেদক || যমুনাপ্রবাহ.কম
পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা ভাটায় পুরোদমে চলছে ইট তৈরির প্রক্রিয়া। মালিকরা চুক্তি নবায়নে অস্বীকৃতি জানালেও তাদের জমি জবরদখল করে জোরপূর্বক ইট পোড়ানোর মহাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জমির মালকরা।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) সরেজমিনে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার গান্ধাইল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ‘যমুনা ব্রিকস’ নামে ওই ইটভাটাটিতে পূর্ণদ্যোমে চলছে ইটকাটার কাজ। এর ৩শ মিটারের মধ্যে রয়েছে শহীদ এম মনসুর আলী আইএইচটি ভবন ও পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিস। এছাড়াও ৫শ মিটারের মধ্যে রয়েছে স্কুল-কলেজ মাদ্রাসাসহ সরকারি-বেসরকারি প্রায় ১০টি স্থাপনা। আবাসিক এলাকায় জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি উপেক্ষা করেই ইটভাটায় আগুণ দেয়ার সকল প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০১৫ সালে আব্দুল করিম নামের এক ব্যক্তি এই ভাটাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ওই সময় কোন প্রকার সরকারি কাগজপত্র ছাড়া এলাকাবাসিকে অনুরোধ করে তাদের জমি ভাড়া নিয়ে ভাটা পরিচালনা করেন। তিনি দুই বছর পূর্বে সিরাজগঞ্জের গোলাম মোস্তফা নামের একজনের নিকট এই ভাটা বিক্রি করেন। সর্বশেষ ভাটায় ব্যবহৃত জমির মালিকদের সাথে চুক্তি ছিল চলতি বছরের জুন মাসের পর আর ভাটায় তাদের জমি ব্যবহার করা হবে না। কিন্তু সেই চুক্তিনামা উপেক্ষা করে, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই এ বছর আবারও ভাটার কাজ শুরু করে মালিক পক্ষ।
স্থানীয়রা আরও বলেন, একসময় এখানে ভাটা চলতে দেয়া হলেও, এখন আর সম্ভব নয়। কারণ ভাটার দুইশ মিটারের মধ্যে সকাল ও বিকালে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার বসে। এছাড়া যমুনার ভাঙ্গনে বিলিন হওয়া শুভগাছা ও গান্ধাইল ইউনিয়নের বেশকিছু জনপদের মানুষের বাসস্থান রয়েছে ভাটার চারপাশ ঘিরে। ভাটার ৫শ মিটারের মধ্যে গড়ে উঠেছে দুটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ১০টির মতো স্থাপনা। এসব দিক বিবেচনা করে ভাটার মালিকের সাথে জমির মালিকরা নতুন করে চুক্তি করতে অস্বীকৃতি জানান। কিন্ত ভাটা মালিক স্থানীয় কিছু দালালদের হাত করে জবরদস্তি করে ভাটার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কথা বলতে গেলে তার সন্ত্রাসীবাহিনী জোতদারদের নানা হুমকী ধামকি প্রদান করে। এসব বিষয় উল্লেখ করে রোববার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি দরখাস্ত দিয়েছেন। নানা দপ্তরেও তারা এর প্রতিকার চেয়ে দরখাস্ত দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইটভাটার ম্যানেজার মুক্তার রহমান বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে। তবে দখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেননি। জমির মালিকদের সাথে মিটমাট করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, এর আগে মৌখিক অভিযোগ পেয়ে ভাটার মালিককে সতর্ক করা হয়েছিল। রোববার বিকেলে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।